শিরোনাম:
ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৬ অগ্রহায়ন ১৪৩১

Shikkha Bichitra
রবিবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৯
প্রথম পাতা » Default Category | মেডিকেল কলেজ | সাক্ষাৎকার » অত্যাধুনিক পদ্ধতিতে শিক্ষা দেওয়ার ও দক্ষ ডাক্তার তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে - অধ্যাপক ডা: ফাতেমা পারভীন চৌধুরী, অধ্যক্ষ, ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ
প্রথম পাতা » Default Category | মেডিকেল কলেজ | সাক্ষাৎকার » অত্যাধুনিক পদ্ধতিতে শিক্ষা দেওয়ার ও দক্ষ ডাক্তার তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে - অধ্যাপক ডা: ফাতেমা পারভীন চৌধুরী, অধ্যক্ষ, ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ
২৩৩৫৬৩ বার পঠিত
রবিবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৯
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

অত্যাধুনিক পদ্ধতিতে শিক্ষা দেওয়ার ও দক্ষ ডাক্তার তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে - অধ্যাপক ডা: ফাতেমা পারভীন চৌধুরী, অধ্যক্ষ, ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ

অত্যাধুনিক পদ্ধতিতে শিক্ষা দেওয়ার ও দক্ষ ডাক্তার তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে - অধ্যাপক ডা: ফাতেমা পারভীন চৌধুরী, অধ্যক্ষ, ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজশুধু এমবিবিএস পাস করলেই ডাক্তার হওয়া যায় না। একজন ডাক্তারের মধ্যে মানবিকতা থাকতে হবে। এমবিবিএস এবং মানবিকতা এই দুই মিলে একজন হয়ে উঠে ডাক্তার। আর এই দুই নিয়ে কাজ করছে ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ। কথাগুলো বলছিলেন ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজের অধ্যাপক ডা: ফাতেমা পারভীন চৌধুরী। সম্প্রতি তিনি শিক্ষাবিচিত্রাকে একটি সাক্ষাৎকার দেন। অধ্যাপক ডা: ফাতেমা পারভীন চৌধুরী একজন এনাটমি বিশেষজ্ঞ। তিনি সেন্টার ফর মেডিকেল এডুকেশনে পাঁচ বছর এবং আইপিএইচএনসহ মোট এগার বছর পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। দীর্ঘ ৩০ বছর ধরে তিনি চিকিৎসা শাস্ত্রে শিক্ষকতা করেন। ২০০৮ ও ২০১২ সালের মেডিকেল নার্সিং ও ম্যাটস কারিকুলাম তৈরিতে প্রত্যক্ষভাবে যুক্ত ছিলেন। এছাড়া তিনি নিউট্রিশন নিয়েও কাজ করেছেন। অধ্যাপক ডা: ফাতেমা পারভীন চৌধুরীর মতে, শিক্ষা যেমন জাতির মেরুদন্ড তেমনি নিউট্রিশনও জাতির মেরুদন্ড।

শিক্ষাবিচিত্রা: আপনাদের মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠার প্রেক্ষাপট ও বর্তমান সম্পর্কে জানতে চাচ্ছি?
অধ্যাপক ডা: ফাতেমা পারভীন চৌধুরী : ২০১৫ সালের জানুয়ারি থেকে ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়। ২০১৪-২০১৫ শিক্ষা বর্ষ দিয়ে আমাদের পথ চলা। ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজের মূল উদ্যোক্তা হলেন অত্র প্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডির চেয়ারম্যান প্রীতি চক্রব্রর্তী। হাসপাতাল চালাতে কতৃপক্ষ দেখল আমাদের দক্ষ চিকিৎসকের অভাব রয়েছে। “এই দক্ষ চিকিৎসক তো আমরা নিজেরাই তৈরি করতে পারি।” এই উপলদ্ধি থেকেই ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ। আমাদের লক্ষ্য হলো চিকিৎসকদের দক্ষতার যেন অভাব না হয়। অর্থাৎ মানুষের চিকিৎসা সেবার জন্য দক্ষ চিকিৎসক গড়ে তোলা। যথাযথ সু-শিক্ষার জন্য এমন মানসম্পন্ন পরিবেশ তৈরি করা সেখানে শিক্ষার্থীরা পর্যাপ্ত তত্ত্বীয় ও ব্যবহারিক জ্ঞান অর্জনে সক্ষম হয়। আমাদের মেডিকেল কলেজের ফলাফলও বেশ সন্তোষজনক। তৃতীয় পেশাগত পরীক্ষায় পাশের হার ৯২ শতাংশ। দ্বিতীয় পেশাগত পরীক্ষায় একজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ৫ম স্থান অর্জন করেছে। এখানে চিকিৎসার উপকরণের কোন অভাব নেই। আমাদের শিক্ষকগণ অনেক অভিজ্ঞ। মান ধরে রাখতে ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ সর্বদাই সচেষ্ট। পাশাপাশি আমাদের রয়েছে শিক্ষামূলক বিনোদনের ব্যবস্থা। পর্যাপ্ত দেশি-বিদেশী বই, র্জানাল সম্বলিত সমৃদ্ধ লাইব্রেরী রয়েছে। উল্লখযোগ্য যে, আমাদের এখানে ঝরে পড়া স্টুডেন্টের সংখ্যা নাই বললেই চলে। একান্ত যদি কোন ছাত্রের ব্যক্তিগত কিংবা পারিবারিক সমস্যা না থাকে, তবে সে কখনোই ঝরে পড়বে না। সে ধরনের যত্ন ইউভার্সেল মেডিকেল কলেজ নিয়ে থাকে।

শিক্ষাবিচিত্রা: বর্তমানে আমাদের দেশে চিকিৎসা শিক্ষা বিকাশে প্রধান প্রতিবন্ধকতাগুলো কি কি?
অধ্যাপক ডা: ফাতেমা পারভীন চৌধুরী : প্রতিবন্ধকতার দুটি দিক রয়েছে। একটি হলো নীতিগত দিক অন্যটি গুণগত। মেডিকেল কলেজের সংখ্যা বাড়লে চিকিৎসা শিক্ষার বিকাশ হয়। তবে মান ধরে রাখা একটি বড় বিষয়। মেডিকেল কলেজ গুলোর মান ধরে রাখতে পারলে আমরা বিশ্বমানের চিকিৎসক গড়ে তুলতে পারব। আর মান ধরে রাখতে হলে দক্ষ শিক্ষক, উপযুক্ত পরিকাঠামো, পর্যাপ্ত শিক্ষা উপকরণ এবং পর্যাপ্ত রোগী প্রয়োজন। এসব যে কলেজগুলোর আছে তাদের আসন বৃদ্ধি করা প্রয়োজন । যখন কোন মেডিকেল কলেজে মোট আসন কম হয় তখন মান ধরে রাখা কঠিন হয়ে পড়ে। আরেকটি প্রতিবন্ধকতা হলো নীতিগত যেমন সমন্বয়ের অভাব। একটি মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠার অনুমতি নিতে হয় তিনটি প্রতিষ্ঠান থেকে। এগুলো হলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং বিএমডিসি। তিন প্রতিষ্ঠান থেকে অনুমোদন পেলে তবেই একটি মেডিকেল কলেজ আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করে। কিন্তু অনুমোদন পেতে এই তিন প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সমন্বয়হীনতা পরিলক্ষিত হয়। অপরদিকে ইংরেজি মাধ্যম থেকে আসা ছাত্ররা চিকিৎসা শিক্ষায় কম ভর্তি হতে পারছে যেখানে মেডিকেল শিক্ষাই ইংরেজি মাধ্যমে হয়। এটা নিয়ে আরো গভীরভাবে ভাবতে হবে। ভালো বীজ থেকেই তো ভালো ফসল আশা করা যায়। তার মানে এসএসসি এবং এইচএসসি থেকেই ছাত্রদের সেভাবে গড়ে তুলতে হবে। এসএসসি এবং এইচএসসিতে ছাত্রদের ভিত্তিটা ভালো হওয়া উচিত

শিক্ষাবিচিত্রা: এটি একটি উল্লেখযোগ্য বিষয় যে, অধিকাংশ এমবিবিএস চিকিৎসক চিকিৎসা সেবা প্রদানের কর্মক্ষেত্র হিসাবে গ্রামকে পছন্দ করেন না- এ বিষয়ে আপনার বক্তব্য জানতে চাচ্ছি?
অধ্যাপক ডা: ফাতেমা পারভীন চৌধুরী :  গ্রামে চকিৎসক থাকা না থাকা নির্ভর করে অনেকটাই আনুষাঙ্গিক সুযোগ-সুবিধার উপর। তাছাড়া এটাও দেখতে হবে যে, গ্রামে কাজ করলে পরিবর্তে সে যে কোন ইনসেন্সেটিভ পেতে পারে। এক্ষেত্রে কিছু উদ্যোগ নেওয়া যেতে পারে। যেমন একজন চিকিৎসক কমপক্ষে দু’বছর গ্রামে থাকলে তাকে পোস্ট গ্র্যাজুয়েট করার সুযোগ দেওয়া হবে। তওে এই দু’বছরে গ্রামে সে কি ধরনের সেবা দিয়েছে, মানুষ কতটুকু তার সেবা পেয়েছে বিবেনায় নিতে হবে। নিয়োগের ক্ষেত্রে, কর্মক্ষেত্র গ্রাম শর্ত হতে পারে। যারা গ্রামে বিশ্বস্ততার সহিত ভালো সেবা দিবে তাদের পদ্যোন্নতি দেওয়া হবে। এছাড়া চিকিৎসকদের গ্রামে না থাকার কারন স্ট্যাডি করা যেতে পারে এবং সেভাবে পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। তবে বর্তমান সরকার এ ব্যাপারে খুবই সচেতন এবং অনেক উন্নতি হয়েছে। আমি মনে করি বর্তমানে এ অবস্থা একটা সন্তোষজনক অবস্থানে রয়েছে।

শিক্ষাবিচিত্রা: আপনার মেডিকেল কলেজের বৈশিষ্ট্যগুলো বলবেন কি? যে কারনে শিক্ষার্থীরা আপনার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অধিকতর পছন্দ করবে?
অধ্যাপক ডা: ফাতেমা পারভীন চৌধুরী : ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজের পর্যাপ্ত শিক্ষা উপকরণ রয়েছে। আমাদের শিক্ষকমন্ডলি অভিজ্ঞ, পর্যাপ্ত রোগীও রয়েছে। শিক্ষক শিক্ষার্থীর সর্ম্পক খুব ভালো এবং তারা প্রতিটি ব্যাপারে আন্তরিক। ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ এমন জায়গায় অবস্থিত ,সারা ঢাকা শহরের সাথে ভালো যোগাযোগের ব্যবস্থা রয়েছে। নিয়মিত ফ্যাকাল্টি ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম করা হয়। আমাদের নিজস্ব একটি রিসার্চ ইনস্টিটিউট রয়েছে। সেখানে বিভিন্ন রোগ নিয়ে গবেষণা করা হয়। বলা যায় একই ছাতার নিচে সব ধরনের সেবা পাওয়া যায়। ইউনিভার্সেল গুরুত্ব দেয় এমবিবিএস+মানবিকতা=ডাক্তার । সব ধরনের সুযোগ-সুবিধাসহ ছেলে মেয়ে উভয়ের জন্য আলাদা হোষ্টেলের সুবিধা রয়েছে।

শিক্ষাবিচিত্রা: আপনার মেডিকেল কলেজের সার্বিক উন্নয়নে কোন বিশেষ পরিকল্পনা রয়েছে কি?
অধ্যাপক ডা: ফাতেমা পারভীন চৌধুরী :  অবশ্যই পরিকল্পনা রয়েছে। শিক্ষা দেওয়া পদ্ধতিতে আমুল পরিবর্তন এনে অত্যাধুনিক করার পরিকল্পনা রয়েছে। এছাড়া বিশেষজ্ঞদের নিয়ে সেমিনারের আয়োজন করে ইউনিভার্সেল মেডিকেল সমৃদ্ধ করাসহ পুরো ম্যানেজমেন্ট এমনভাবে ঢেলে সাজানো হয়েছে যাতে যে কেউ বলতে পারে আমি ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজের ছাত্র ছিলাম।



আর্কাইভ